আজ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখের আজকের দিনে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার পিতামাতার চোদ্দো সন্তানের মধ্যে কণিষ্ঠতম। ছেলেবেলায় রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য পত্রিকা, সঙ্গীত ও নাট্যানুষ্ঠানের এক পরিবেশে প্রতিপালিত হন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার ছিল সেযুগের বিদ্যোৎসাহী ও শিল্পোৎসাহী সমাজে এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। রবীন্দ্রনাথের বড়োদাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ছিলেন একজন সম্মানীয় দার্শনিক ও কবি। তার মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন সেযুগের অভিজাত ও শ্বেতাঙ্গ-প্রধান ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের প্রথম ভারতীয় সদস্য। নতুনদাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ছিলেন একজন প্রতিভাবান সংগীতস্রষ্টা ও নাট্যকার। তার এক দিদি স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন এক স্বনামধন্য ঔপন্যাসিক।
তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার অনেক কবিতা ও গান ছিল সীমাহীন প্রেরণার উৎস।
রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা এই অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যোগায়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধেই শুধু নয়, আমাদের প্রতিটি সংগ্রামে চিরকালই কবির রচনাসমূহ প্রাণের সঞ্চার করে।
সোমবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষীরা কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি পালন করছে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও পরম শ্রদ্ধায়। এবার জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সমাজ সংস্কার ও রবীন্দ্রনাথ।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হচ্ছে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর পতিসরে।
জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবির চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমিও আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
অন্তর মম বিকশিত করো,,,,,,,,অন্তরতর হে।
নির্মল করো, উজ্জ্বল করো,,,,,,,,,,,,সুন্দর কর হে।
জাগ্রত করো,,,,,,,,,,,,,,,, উদ্যত করো,,,,,,,নির্ভয় করো হে।
মঙ্গল করো,,,,,,,,,,,, নরলস নিঃসংশয় করো হে।
অন্তর মম বিকশিত করো,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অন্তরতর হে।
‘রবীন্দ্রনাথ একাধারে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বমানে উন্নীত করার পাশাপাশি জাতির চিন্তা জগতে আধুনিকতার উন্মেষ ঘটিয়েছেন। বাঙালির মানস গঠনে পালন করেছেন অগ্রদূতের ভূমিকা। সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও কল্যাণের পথে অভিসারি হয়ে ওঠার প্রেরণা যোগানোর মধ্য দিয়ে বাঙালি মননকে বিশ্বমানে উন্নীত করে জাতিকে আবদ্ধ করে গেছেন চির কৃতজ্ঞতায়। দেড়শত বছর পেরিয়েও কবি আমাদের মাঝে তাই চিরজাগরূক হয়ে আছেন।’
Leave a Reply